সারা-বাংলা

পদবঞ্চিতদের সংবাদ সম্মেলন: ছাত্রলীগের নেতা ও কিশোরগ্যাং সদস্যদের নিয়ে ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণার অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টার | 📅 প্রকাশের তারিখ: ১২ মে ২০২৫

পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার কালাইয়া ইদ্রিস মোল্লা ডিগ্রি কলেজ ছাত্রদলের নতুন কমিটি নিয়ে নানা বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, গত ৬ মে পটুয়াখালী জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব ওই কলেজ ছাত্রদলের ১১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করেন। কমিটির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ গুরুত্বপূর্ণ পদে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের পদধারী নেতা এবং কিশোরগ্যাং সদস্যদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন পদবঞ্চিত নেতারা।

এই অভিযোগ তুলে কলেজ ছাত্রদলের একাংশের নেতারা কমিটি বাতিলের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন। সোমবার বেলা ১২টার দিকে ইদ্রিস মোল্লা ডিগ্রি কলেজ ক্যাম্পাসে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন কলেজ ছাত্রদল নেতা মো. কাওছার হোসেন। তিনি বলেন, “আমি সভাপতি পদপ্রত্যাশী ছিলাম। ছাত্ররাজনীতির শুরু থেকেই ছাত্রদলের রাজনীতি করে আসছি। তারপরেও আমাকে সভাপতি করা হয়নি। সভাপতি করা হয়েছে ছাত্রলীগের চিহ্নিত কর্মী ও কিশোরগ্যাং গ্রুপের সদস্য মো. নাইম মৃধাকে। সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী জিসান মাহমুদকে।”

তিনি আরও জানান, সহ-সভাপতি করা হয়েছে পূর্ব কালাইয়া হাসান সিদ্দিক মাধ্যমিক বিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি সাজিদ হাসান নিহাদকে এবং সাংগঠনিক সম্পাদক করা হয়েছে কালাইয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি সাফিন মাহমুদকে।

লিখিত বক্তব্যে আরও অভিযোগ করা হয়, কমিটির সাধারণ সম্পাদক জিসান ও সহ-সভাপতি উজ্জ্বল কিশোরগ্যাং-সম্পর্কিত হামলার সাথে জড়িত থাকায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে কালাইয়া ইদ্রিস মোল্লা ডিগ্রি কলেজ ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনিচুর রহমান বলেন, “আমি সাধারণ সম্পাদক পদপ্রত্যাশী ছিলাম, অথচ আমাকে করা হয়েছে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। যারা আওয়ামী লীগের শাসনামলে রাজপথে ছিল, প্রোগ্রাম করেছে, তাদের উপযুক্ত স্থান দেওয়া হয়নি। যারা ছাত্রলীগ করেছে, ছাত্রলীগ করে আমাদের উপর হামলা চালিয়েছে, তারাই ছাত্রদলের পদ-পদবী পেয়েছে। এটি অত্যন্ত লজ্জাজনক ঘটনা।”

তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন নতুন কমিটির সভাপতি মো. নাইম মৃধা। তিনি বলেন, “কলেজের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও খেলাধুলার সময় অনেকের সাথে ছবি তোলা হয়েছে। তাদের মধ্যে কেউ কেউ ছাত্রলীগ করতে পারে, কিন্তু আমি ছাত্রলীগ করিনি। আমি বিএনপি পরিবারের সন্তান, ছোটবেলা থেকেই ছাত্রদলের সাথে জড়িত। একটি কুচক্রি মহলের মদদে আমার বিরুদ্ধে এসব মিথ্যাচার করা হচ্ছে।”

কমিটির সাধারণ সম্পাদক জিসান মাহমুদও তার বিরুদ্ধে ছাত্রলীগ সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, “আমি কখনো ছাত্রলীগের সাথে যুক্ত ছিলাম না। ২০২৩ সালে আমার ফেসবুক আইডি হ্যাক হয়েছিল। যারা হ্যাক করেছিল, তারা আওয়ামী লীগের পক্ষে বিভিন্ন পোস্ট করেছিল। আমি ছাত্রদলের সৈনিক, আমি তারেক রহমানের সৈনিক। কোনো অপপ্রচার করে লাভ হবে না।”

এই বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব জাকারিয়া আহমেদ বলেন, “অভিযোগের তদন্ত চলছে। তদন্তে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের সাথে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *